রাজধানীর পুরান ঢাকায় এক ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি সমাজকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দেবে।
গত বুধবার (০৭ জুলাই) পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনের সড়কে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) এলোপাতাড়ি আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই পৈশাচিক ঘটনা কেবল একটি জীবনহানিই নয়—এটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, নাগরিক অধিকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গভীর হতাশার বহিঃপ্রকাশ। আমাদের সংগঠনের নীতি, আদর্শ ও রাজনীতির সঙ্গে সন্ত্রাস ও বর্বরতার কোনো সম্পর্ক নেই। অপরাধী যেই হোক, তার স্থান কখনোই আইন ও ন্যায়বিচারের ঊর্ধ্বে হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণ–আন্দোলনে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর উল্লিখিত নির্মম ঘটনাটি দেশের মানুষের বিবেককে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত পৈশাচিক ও ন্যক্কারজনক ঘটনাটির দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে আরও গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘উল্লিখিত ঘটনাটির অবিলম্বে নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত নিশ্চিত করুন এবং প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।’
বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল নিহত ব্যক্তির রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রসঙ্গত, বৈদ্যুতিক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দে¦র জেরে রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই এলাকায় বিদ্যুতের তামার তার ও সাদা তারের ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণ ছিল সোহাগ ওরফে লাল চাঁদের কাছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তা নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া ছিলেন মাহমুদুল হাসান মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু নামে আরও দুজন। তারা ওই বাণিজ্যের ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিলেন। এর জেরেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরই জেরে প্রকাশ্যে ইট-পাথর মেরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ব্যবসায়ী সোহাগকে। এ ঘটনায় মাহমুদুল হাসান মাহিন ও তারেক রহমান রবিনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মহিন, টিটুসহ অভিযুক্তরা যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
গত বুধবার (০৭ জুলাই) পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলে কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ফটকে এই নির্মম হত্যাযজ্ঞ চলে। প্রকাশ্যে এমন হত্যাযজ্ঞে সোহাগকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি কেউ। ইতোমধ্যে নৃশংস এই হত্যাকান্ডের দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
গণযোগ/এমএইচ