ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
gonojog24
Bongosoft Ltd.

তারেক রহমান এখন অগণতান্ত্রিক শক্তির প্রধান লক্ষ্য


গণযোগ | মোহাম্মদ আল আমিন প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম আপডেট: জুলাই ১, ২০১৯ ১১:৩৯ এএম তারেক রহমান এখন অগণতান্ত্রিক শক্তির প্রধান লক্ষ্য
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ছবি: সংগৃহীত

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন ষড়যন্ত্রকারীদের, বিশেষ করে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছেন। যারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রে রূপান্তরিত করা বন্ধ করার জন্য দেশে এবং বিদেশে ষড়যন্ত্র করছে।

দেশে যখনই কোনো ইস্যুতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, তখনই একটি গোষ্ঠী, যারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে পরাজয়ের আশঙ্কায় থাকে, তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।

এসব দেখে মনে হচ্ছে, তারেক রহমানের ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ স্লোগানে দেশ গড়ার স্বপ্নকে কেন্দ্র করেই মূলত তার এবং বিএনপির বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্র চলছে।


ঈর্ষা ও বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে একটি ক্ষুদ্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী অপপ্রচার ও নানা কৌশলের মাধ্যমে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
তাকে পরাজিত করতে ষড়যন্ত্রকারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে, এবং এমন ঘটনায় জড়াচ্ছে যার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। একই সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে তার বিরুদ্ধে ইস্যু তৈরি করে তাকে বিপদে ফেলতে চাচ্ছে।

সম্প্রতি দেখা গেছে, মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুটি ইসলামী রাজনৈতিক দল এবং একটি নতুন রাজনৈতিক দল ‘প্রতিবাদের’ নামে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপপ্রচার চালিয়েছে।


অথচ বিএনপি ঘটনাটি ঘটার পরপরই কোনো তদন্ত ছাড়াই দলের কয়েকজন কর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে কড়া অবস্থান নিয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এমনকি কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্র কিছু রাজনৈতিক দল মিছিল বের করেছে, যেখানে তারা তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করে অশালীন স্লোগান দেয়, যা রাজনৈতিক এবং সামাজিক শিষ্টাচারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এতে বোঝা যায়, এই প্রতিবাদ একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে সংঘটিত হয়েছে।

একই সঙ্গে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে অশুভ মহল বিভিন্ন ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও তিনি লন্ডনে অবস্থান করেই দল পরিচালনা করছেন।


তারেক রহমান দেশের জন্য, জনগণের জন্য, এবং গণতন্ত্রের জন্য তার ভূমিকার কারণে দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তিনি গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভূমিকা রাখেন।

তারেক রহমানের কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, তিনি দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত আন্তরিক। দলের মধ্যে কেউ কোনো অনৈতিক বা অপকর্মে জড়ালে তিনি কঠোর হস্তে তা দমন করছেন।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী অস্থির পরিস্থিতিতেও, তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশব্যাপী সজাগ ছিলেন যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।


একই সঙ্গে, তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেন যেন কেউ কোনো ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে না পড়ে।
শুধু তাই নয়, তারেক রহমান তার দলের লোকদের যেকোনো অপকর্মের বিরুদ্ধে সর্বদা কঠোর অবস্থান বজায় রাখেন। কারণ তার দলের লোকদের যেকোনো অপরাধমূলক বা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার খবর পেলেই তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।

সম্প্রতি লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাম্প্রতিক ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে ভাষণ দিয়ে তারেক রহমান বিএনপি নেতাকর্মীদের এমন কিছু না করার আহ্বান জানান; যা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।

তিনি বলেন, যদি আপনি এমন কিছু করেন যা মানুষ অপছন্দ করে, তাহলে প্রতিটি নেতা ও কর্মীকে - এমনকি দলকেও এর নেতিবাচক প্রভাব বহন করতে হবে। তাই আমি বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার প্রতিটি নেতা ও কর্মীকে এমন কোনো কার্যকলাপে লিপ্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি, যা আমাদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের ক্ষোভের সৃষ্টি করতে পারে। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলীয় নেতাকর্মীদের সকল স্তরে ভালো কাজ ও ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে জনআস্থা অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন এবং সহনশীলতা চর্চা ও ভিন্নমতকে সম্মান করার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, প্রশাসন যদি সহযোগিতা চায়, তাহলে বিএনপির নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে অবশ্যই সহায়তা করতে হবে।

তারেক রহমান সবসময় দলের নেতাকর্মীদের যেকোনো অনিয়মের প্রতি শূন্য সহনশীলতা দেখিয়ে সাংগঠনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। ইতোমধ্যে দল কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে, এক হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে একাধিক মামলা করেছে।

দুঃখজনকভাবে, দল আন্তরিকতা দেখালেও দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা প্রদর্শন করছে। এ কারণে অপরাধীরা প্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে অপরাধ করে যাচ্ছে।

তারেক রহমান যখন থেকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন, যা দেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ সুগম করবে এবং যার জন্য দেশের মানুষ ও সব ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সংগ্রাম করে আসছে, তখন থেকেই বিএনপির বিরোধীরা তার প্রতি চরম অসন্তুষ্ট।

অন্যদিকে, কিছু রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) বলছে— তারা সংস্কার ও জুলাই চার্টার ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। তবে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে তাদের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে।

এই দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের আগে পিআর পদ্ধতিতে ভোট এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি করছে, যা স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করবে। কিন্তু বিএনপি বলছে, আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে এবং নির্বাচিত সংসদ সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেবে। এই ষড়যন্ত্রে পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তির দোসররাও জড়িত।

এর আগেও, ১/১১ পরিবর্তনের সময় তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে অগণতান্ত্রিক শক্তির মাধ্যমে তাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলা হয়েছিল। এরা তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার ছড়িয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আদালতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন এবং মামলা থেকে খালাস পান। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি।


 এখন তারেক রহমানের জনপ্রিয়তাই যেন তার প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও সক্রিয় হয়েছে। তারা ভোটের মাধ্যমে তাকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে এখন অপপ্রচার ছড়িয়ে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে। বিএনপিকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র রোধে সজাগ থাকতে হবে। কারণ তিনি শুধু দলের নেতা নন, বরং দেশের একটি সম্পদ এবং একটি নতুন, উন্নত বাংলাদেশের পুনর্গঠনের জন্য অপরিহার্য নেতৃত্ব।

সূত্র :কালের কন্ঠ

Side banner
Side banner
Link copied!