ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
gonojog24
Bongosoft Ltd.
৫০ হাজার চিকিৎসকের পেশার ‘উপেক্ষিত’

‘স্বাস্থ্য সংস্কার প্রতিবেদন’ নিয়ে হোমিও চিকিৎসকদের আপত্তি


গণযোগ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৫, ১২:২৮ এএম আপডেট: জুলাই ১, ২০১৯ ১১:৩৯ এএম ‘স্বাস্থ্য সংস্কার প্রতিবেদন’ নিয়ে হোমিও চিকিৎসকদের আপত্তি
ছবি:সংগৃহীত


স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে নানা ধরনের অসঙ্গতি রয়েছে। কমিশনে  হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের প্রতিনিধি নেওয়া হয়নি। এমনকি, কমিশন তাদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়নি। তাই এ প্রতিবেদন সংশোধন করার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

তারা বলেন, চিকিৎসার এ তিন খাত নিয়ে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিকর পরিসংখ্যান সংস্কার প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও কমিশনের প্রতিবেদনে তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। 

গত সোমবার (২৬ রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি হোটেলে ‘স্বাস্থ্য খাত সংস্কার প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও প্রস্তাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকেরা এ দাবি জানান।

বৈষম্যবিরোধী হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক জাতীয় ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের কোন কোন পৃষ্ঠায় হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের সম্পর্কে কী কী ‘ভুল’ তথ্য ও পরিসংখ্যান রয়েছে, তা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হয়।

 

কমিশন প্রতিবেদনের ৭৩ পৃষ্ঠায় বলা আছে, দেশের ১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ হোমিওপ্যাথি এবং শূন্য দশমিক ২ শতাংশ মানুষ আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি চিকিৎসা নেন। এ পরিসংখ্যান ঠিক নয় বলে দাবি করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও বলা হয়, এর আগে বিভিন্ন জাতীয় জরিপ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২৮ শতাংশের বেশি মানুষ হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নেন।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মির্জা লুৎফর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার প্রতিবেদনে হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের প্রতি চরম অবহেলা দেখানো হয়েছে, অবমাননা করা হয়েছে। আমরা এ প্রতিবেদনের সংশোধন চাই।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আছে ৬০৭টি। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে নিবন্ধিত। এসব প্রতিষ্ঠানের ওষুধের বাজার কমপক্ষে আড়াই হাজার কোটি টাকার। দেশে হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক আছেন প্রায় ৫০ হাজার। স্বাস্থ্যসেবায় তাদের উপস্থিতি, তাদের সেবার কোনো গুরুত্ব পায়নি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। উলটো প্রতিবেদনের ১১৫, ১২৪ ও ১৩৪ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, এমবিবিএস এবং বিডিএস ব্যতীত কেউ চিকিৎসক পরিচয়ে চিকিৎসা দিতে পারবেন না।

আয়োজকেরা বলেন, বর্তমান সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন’ বা সনাতন চিকিৎসাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। চীন ও ভারতে এ চিকিৎসাসেবার বিশেষ সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাই মূলত ট্র্যাডিশনাল মেডিসিনের আওতাভুক্ত। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতেও একে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনের ৮৩ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে গবেষণার ভিত্তিতে হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাপদ্ধতির প্রভাব ও ফলাফল মূল্যায়ন করতে হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য পর্যালোচনা ও মূল্যায়নকাঠামো গঠন করতে হবে। এ বক্তব্য হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাপদ্ধতির প্রতি বিরূপ মনোভাবেরই প্রতিফলন।

ঐক্য পরিষদের পরিষদের প্রেসিডেন্ট মির্জা লুৎফর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনে চিকিৎসকদের একক প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাত সংস্কার প্রতিবেদনে হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের প্রতি চরম অবহেলা দেখানো হয়েছে, অবমাননা করা হয়েছে। আমরা এ প্রতিবেদনের সংশোধন চাই।

অনুষ্ঠানে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কাজী হাবিবুর রহমান বলেন, হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকেরা স্বীকৃত চিকিৎসক। তারা কোন পরিচয়ে চিকিৎসাসেবা দেবেন? তিনি বলেন, কমিশনের এ মত বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন-২০২৩ এবং ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক প্র্যাক্টিশনার্স অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩-এর পরিপন্থি।

গণযোগ/এমএইচ

Side banner

স্বাস্থ্য বিভাগের আরো খবর

Side banner
Link copied!