বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানে ব্যাপক পরিমাণে বাড়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এটি আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ ও দোসর এবং মাফিয়াদের লুটপাটের পরিমাণ দেখিয়েছে বলে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন আরও বলেন, 'সংবাদপত্রের প্রতিবেদন দেখে আমি হতাশ হয়েছি যে, সুইস ব্যাংকে (বাংলাদেশিদের দ্বারা) জমা অর্থের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে...এটি ফ্যাসিবাদী শাসনামলে মাফিয়া এবং লুটেরা চক্রের ব্যাপক লুটপাটের স্পষ্ট প্রতিফলন।'
আজ শনিবার (২১ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি দলের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ঠিক জানি না কে, কখন বা কীভাবে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ সুইস ব্যাংকে জমা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'কিন্তু এই খবর দেখার পর, প্রতিটি দেশপ্রেমিক ব্যক্তি ভাবতে পারেন যে, গণঅভ্যুত্থানের পর কি আসলেই কোনো পরিবর্তন এসেছে... যদি প্রতিবেদনটি ২০২৪ সালের হয়—তাহলে এটি সত্য।'
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে—মাত্র এক বছরে ৩৩ গুণ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) এর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে মোট আমানত প্রায় ৫৯ কোটি সুইস ফ্রাঁয় পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালে মাত্র ১ কোটি ৭০ লাখ ফ্রাঁ ছিল।
ফখরুল অভিযোগ করেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ তার প্রায় ১৬ বছরের দুঃশাসনে বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, 'তারা নির্বাচন ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, বিচার বিভাগ, আমলাতন্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন, বর্তমান সরকার এই সমস্ত ক্ষেত্র পুনরুদ্ধার এবং মেরামত করার চেষ্টা করছে।'
বিএনপি নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে এবং নিঃসন্দেহে অনেক ভালো কাজ করেছে। ‘তারা আমাদের (সঠিক) পথ দেখাচ্ছে। আমরা আশা করি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে জড়িত সকল রাজনৈতিক দল এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে এবং তাদের সমর্থন করবে। সরকার জাতিকে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আসুন আমরা সকলেই গণঅভ্যুত্থানের ফলে সৃষ্ট সুযোগকে রাষ্ট্র ও জাতি পুনর্গঠন এবং দেশকে একটি প্রকৃত গণতন্ত্রে রূপান্তরের জন্য কাজে লাগাই।'
গণযোগ/এমএইচ